Select Language

[gtranslate]
১৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ রবিবার ২রা জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আবির্ভাব দিবসে অনুকূলচন্দ্র ঠাকুরকে শ্রদ্ধাঞ্জলী।

সুস্মিত মিশ্র
মানুষের দুঃখের স্থায়ী নিবারণ করতে হলে শুধু শারীরিক নয় ,তার মানসিক ও আত্মিক এই তিন রকম রোগেরই চিকিত্‍সা দরকার।একেবারে নতুন আঙ্গিকে ধর্ম ভাবনার কথা তুলে ধরলেন অনুকূলচন্দ্র চক্রবর্তী।তিনি মনে করতেন যে মন সুস্থ থাকলে শরীর সুস্থ থাকবে। মানুষের আত্মিক উন্নতির জন্য তিনি কীর্তনদল গঠন করেন।আজকের দিনে পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ববঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় বাঙ্গালী ধর্মগুরু হলেন অনুকূলচন্দ্র ঠাকুর।

১৮৮৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের পাবনা জেলার হেমায়েতপুরে জন্মগ্রহণ করেন অনুকূল চন্দ্র চক্রবর্তী, যিনি পরবর্তীকালে অনুকূল চন্দ্র ঠাকুর নামে পরিচিত হন।তাঁর পিতা হলেন শিবচন্দ্র চক্রবর্তী এবং মাতা মনমোহিনী দেবী।


মানুষের প্রকৃত সুস্থতার জন্যে তিনি মানসিক ব্যাধির চিকিৎসার প্রতিই বেশি জোর দিতেন, কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন শারীরিক সুস্থতা অনেকটাই মানসিক সুস্থতার ওপর নির্ভর করে। তাই মায়ের নিকট দীক্ষা নেওয়ার পর অনুকূলচন্দ্র মানুষের আত্মিক উন্নয়নের জন্য কীর্তনদল গঠন করেন। কীর্তনের সময় তিনি মাঝে মাঝে দিব্যভাবে আবিষ্ট হয়ে পড়তেন। ওই সময় তাঁর মুখ থেকে উচ্চারিত বাণীসমূহ পরে সংগৃহীত হয়ে পুণ্যপুঁথি নামে প্রকাশিত হয়। তখন থেকেই লোকে তাঁকে ‘ঠাকুর’ বলে সম্বোধন করত।

সৎসঙ্গের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র।ধর্ম কর্মের অপূর্ব সমন্বয়ে সৎসঙ্গ আশ্রম। শিক্ষা, কৃষি, শিল্প সুবিবাহ আস্তিকের এই চার স্তম্ভের অভিব্যক্তি। এই আশ্রমে বিভিন্নমুখী কর্ম প্রতিষ্ঠানের বিদ্যায়তন গড়ে উঠল, প্রাচীন ঋষিদের তপোবনের নবতর সংস্করণ যেন। ব্রহ্মচর্য্য, গার্হস্থ্য়, বানপ্রস্থ ও সন্ন্যাস সনাতন আর্য জীবনের এই চারটি স্তরই সৎসঙ্গ আশ্রমভূমিতে এক সামঞ্জস্যপূর্ণ যুগোপযোগী রূপ লাভ করে। প্রতিষ্ঠানটির নামের তাৎপর্য ব্যখ্যা করে তিনি বলেন, ‘সৎ ও সংযুক্তির সহিত তদগতিসম্পন্ন যাঁরা তাঁরাই সৎসঙ্গী, আর তাদের মিলনক্ষেত্র হল সৎসঙ্গ। শুরু হল মানুষ তৈরির আবাদ। কর্মের মাধ্যমে যোগ্যতর মানুষ গড়ে তোলাই হল এর লক্ষ্য। সৎসঙ্গ “ইষ্টভৃতি”-এর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে যা এক বিরল প্রথা।

তিনি সাধারন মানুষের কথা ভেবে ১৯৪৬ সালে বিহারের ‘দেওঘর’ এলাকায় তপোবন বিদ্যালয়, দাতব্য চিকিৎসালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ, পাবলিশিং হাউজ, ছাপাখানা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করেন। কর্মের মাধ্যমে যোগ্যতর মানুষ গড়ে তোলাই ছিলো তার লক্ষ্য।


ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের আধ্যাত্মিক প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দলে দলে মানুষ এসে তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধী, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, গুলজারীলাল নন্দা এই সৎসঙ্গের কর্মকাণ্ড দর্শন করে ভূয়শী প্রশংসা করেন। ১৯৬৯ সনের ২৭ জানুয়ারী তারিখে ৮১ বছর বয়সে তাঁরই প্রতিষ্ঠিত আশ্রম ভারতের বিহারে দেওঘরে ঠাকুর দেহ ত্যাগ করেন।


অনুকূলচন্দ্র ঠাকুর মোট ৮২টি বই লিখেন।
১২টি বই লিখেছেন ইংরেজিতে। তার বইয়ের মুলকথা ছিলো- কি ভাবে মানুষ ভাল থাকবে, সুস্থ থাকবে, শান্তিপূর্ণ ভাবে সবাই মিলে মিশে থাকবে, সেই শিক্ষাই দেওয়া হয়েছে বইগুলোতে।বলতেন “অশিক্ষিতকে শিক্ষা দেওয়া বরং অনেক সোজা। কুশিক্ষিতের শিক্ষক হওয়া কঠিন।”

সমাজ সংস্কারক ধর্ম গুরু অনুকূলচন্দ্র ঠাকুরকে তাঁর আবির্ভাব দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করছে এখন সংবাদ পরিবার

ekhansangbad
Author: ekhansangbad

Related News

Also Read